Thursday, December 31, 2009

আমার দুই দেশ

আমার দুই দেশ
মোহাম্মদ সোহরাব আজিজ
নিউ ইয়র্ক
১১/১৬/২০০৯

নিসংগ নিস্তব্দ রাতে হারিকেন ইডায় প্লাবিত দু’কুল
আকাশে বাঁকা চাঁদ উকি মারে।
বৃষ্টির ঝনঝনানিতে ঘনঘনে রাত।
মেঘনার ভাঙ্গনে চাঁদপুরে জনবসতি গৃহহীন
নদীমাতার কেন এত অভিমান?
কার বিরহে?
ভৈরবের কলোরব এখন আমার প্রাণে
শ্রীমঙ্গলে ঠান্ডায় প্রাণ যায় যায়
এখন এই আলোকিত শহরের উত্তপ্ত ঘরে
আমার দেহখানি অতীব ঘর্মাক্ত।
আমি মঙ্গল কামনায়
আমার প্রাণের,আমার দেহের।
আমার দুই অস্তিত্তের।
ভোগবিলাশে মত্ত নষ্টভ্রষ্ট এই দেহখানি
জ্বলে পুড়ে যায়,
আমার শীতল প্রাণের উত্তাপে।
জলবায়ু বন্যা আর কত আনবে তুমি কান্না?
যমুনার ভাঙ্গনে বারবার উজির দেওয়ান
হিমালয়ের বরফগলা জলে স্বপ্নেরা খানখান।
ভোলাতে ভেলা চলে বারোমাস,
আজ দশদিকে প্লাবনের কারাবাস।
কারো কারো পৌষ মাসে আমারি সর্বনাশ,
এই হৃদয়ে বহে শুধু দীর্গশ্বাস আর দীর্ঘশ্বাস।

শিল্পীর জীবন কোরবান

শিল্পীর জীবন কোরবান
মোহাম্মদ সোহরাব আজিজ
২৪শে নভেম্বর,২০০৯
নিউ ইয়র্ক।


ইসমত আক্তার শিল্পীর কিসমতে কোরবান নাই এই ঈদে,
নিজেই কোরবানের পশু হয় এই ঈদে।
নাই আর খুশির নিঁদ,
ঘাতক স্বামী প্রানের পুরুষ কেঁড়ে নেয় তার জান।
ঘাতকের মুঘুরের আঘাতে মা শিশুর জান কোরবান।
মাতা শিল্পী এখন কোরবান।
কোলজুড়ে ফুটফুটে সন্তান,সোনার সংসার,
জামগোড়ার কাঁঠালতলায়,
অভাব অনটনের সংসার এখন বিরান,
অভাবের যাতনায় দাম্পত্যের প্রেম
দেহ আর মন থেকে পালালো।
কলহের জের আনলো টেনে কালোমেঘের
কেরোসিনের আগুনে প্রজ্জিলত মৃতদেহ
অগ্নিদগ্ধ ইসমত।
পাষন্ড পামর সীমার স্বামী
প্রতারক ঘাতক,
যে নারী তিলে তিলে উজার করে দিলো তোরে সমস্ত জীবনের আয়োজন
এই তার প্রতিদান?
শিল্পীর জন্য শোকের স্লোক এখন
দুই দিন পর খুশির ঈদ
এই প্রাণে কেন এত হারানোর ভীত?
‘তুমি আমার প্রাণের স্বামী
খোদার পরে তোমায় বড় জানি’।
শিল্পীর ভালোবাসা হৃদয়ের আশা
আজ কেন মিশে যায় বেদনার ভাষায়?
পতি, আনন্দ,দাম্পত্য এখন স্বর্গের কাছাকাছি
ব্যথার বোঝা বুকে নিয়ে আমি আজ হাসি।
নিদারুন নিষ্ঠুর পাষন্ড পামরের অট্টহাসি।
যার রক্তের চিহৃ জীবনের ফসল
হঠাৎ কেন হয় বিফল?
এখানে কিছু কিছু মানব দানবের তান্ডবে শিল্পীরা বড়ই কাতর
স্বর্গের তারা হয়ে উঁকি মারে, ছড়ায় প্রেমের আতর।

কোরবানী এখন

কোরবানী এখন
মোহাম্মদ সোহরাব আজিজ
২৪শে নভেম্বর,২০০৯
নিউ ইয়র্ক।
প্রিয়জনের সান্নিধ্যে ঈদ উদযাপনে ঘরমুখো মানুষের ভীড়,বড়ই আনন্দঘন পরিবেশ
ব্যস্ততা প্রবল কোরবানীর পশুর হাটে ,
ব্যাপক জনসমাগম ঘটে গবাদিপশুর হাটে,
মার্কেট শপিং সেন্টার,রেলওয়ে স্টেশন বাস, লঞ্চ ঘাটে,
ঘরফেরা মানুষের উপচেপড়া ভীড়ে।

পশু হাট গাবতলীতে শুধু গরু নয় এসেছে মরুর প্রাণী উট। মহিষ, খাসী ও ভেড়া প্রচুর ।
বিদেশী বা শঙ্কর জাত ,দেশী জাতের গরু।
কাতারে কাতার দেশী জাতের ষাঁড় ।
শখের পশুটিকে সাজাতেই যতসব আয়োজন
হযরতনগরের দেওয়ানবাড়ির দাদখান
সিন্ধি জাতের ষাঁড়ের দাম হাঁকেন লাখখান।


‘ঈদের দিন বলিয়া মদিনার ঘরে ঘরে আনন্দ,’
সারা দুনিয়ার মুসলমানের ঘরে ঘরে আনন্দের ছন্দ।
মহান আল্লাহ রাব্বুল আল’আমিনের আদেশ পালনের আনন্দ।
বিরাট গরুছাগলের হাটে ধর্মপ্রাণ মানুষের ঢল
লাখো টাকার গরু নিয়ে কত হইহুল্লা আর শরগোল
কে কার চেয়ে বেশি দাম হাঁকাতে পারে তারি কম্পিটিশন।
আর একদিকে নিরীহ প্রাণীরা রবের সন্তুষ্টি কামনায় নিরবে চোখের জল ফেলে
নিজের জীবন উৎসর্গ করে।
‘পশু হয়ে জন্মেছি, মানুষতো জবাই করবে একদিন।খাবে এই পবিত্র ইদে, কোরবানী হই
এটাই পরম পাওয়া।‘
গাবতলী বাজারে হাজার হাজার পশুর শেষ কারবার,
বেঁচে আছি আর কদিন,এইটুকু শোকরগোজার।
জানি তবে প্রভুর দরবারে মাংসপিন্ড যায়না,
শুধু রক্তের পিঙ্কি পড়ে আরশের আয়নায়।
উৎসর্গের নজির আর বিশ্বাসের জোর।

আল্লাহের ঘরের মেহমান

আল্লাহের ঘরের মেহমান
মোহাম্মদ সোহরাব আজিজ
২৪শে নভেম্বর,২০০৯
নিউ ইয়র্ক।


হাজীরা ইহরাম বেঁধে,
‘লাব্বায়েক আল্লাহুমা লাব্বায়েক’ ধ্বনিতে প্রকম্পিত করে পবিত্র মক্কা নগরী,
মীনায় পাঁচওয়াক্ত নামাজ আদায় করে, উচ্চস্বরে তালবিয়া পড়তে থাকে।
‘করুনার পাহাড়ের’ পাদদেশ আরাফায় হজের খোতবা শুনে মনপ্রাণে,
মুজাদালেফায় খোলা আকাশের নিচে রাতযাপন শেষে
মিনায় শয়তানকে কঙ্কর নিক্ষেপ করে আবাল-বৃ্দ্ধ-বণিতায়,
রবের দরবারে মাথানত তাই ।
কোরবানী আদায় শেষে মাথামুন্ডন করে অবশেষে।


জান্নাতের টুকরা হাজরে আসওয়াদ ‘কালো পাথর’ দুনিয়াতে বেহেস্তের অংশ
আল্লাহ পাকের দক্ষিণ হস্ত,
হাজীরা আজ সেই কুদরতি হাতের সাথে করমর্দন করে,
শাহেনশাহের হাত ধরে যেমন করে সন্মানিত হয় অতি ছোটলোকে।
কালোপাথরের ঠোঁট আর দুইটি জিহ্বা ,কিয়ামতে সাক্ষী হবে তোমার মুক্তির তরে।
‘আমি জানি তুমি পাথরমাত্র,ক্ষতি ও উপকার কিছুই কর না,’
তোমাকে চুম্বন করি রবের প্রতি সন্মান প্রদর্শনে,
রাসূলের আদেশ পালনের পূর্ণ বাস্তবায়নে।
আতিউল্লাহা আর আতিউররাসূলা নীতির অনুসরনে।
কাবা ঘর তওয়াফ করে ঈমানদার বান্দায়
আর মদিনা মনওয়ারায় প্রিয় নবীজির রওজায়
শতকোটি সালাম জানায়।

টি জি আই এফ

টি জি আই এফ
মোহাম্মদ সোহরাব আজিজ
নিউ ইয়র্ক
১১/২৫/২০০৯

আজ বিধাতা অনেক অনেক ধন্যবাদ পেলেন
‘থ্যাঙ্কস গড ইটস ফ্রাইডে’।
বেটারি পার্কে বসে লাঞ্চ খাচ্ছে একটু থান্ডার মাঝে
বার বার ঘড়িতে চোখ বোলায়,
কখন পাঁচটা বাজে।
কাজ আর কাজ ,ওরে বাবা এত কাজ আর কাজ,
করতে করতে কাজ
উঠে গেছে কতজনের লাজ।
কেউ কেউ অফিসে আসে টাইট জীন্স পরে
আবার কেউ কেউ অতীব খোলা কাপড়চোপড়ে,
কাজের চেয়ে লাজের প্রতি ঝুঁকে পড়ে সকলে!
হাডসনের তীরে ঠান্ডা বাতাস বয়
রাতের বেলা জমকালো পার্টি জমবে কেবল মন্দ নয়।
শত শত নারীপুরুষের মিশামিশি,
নৃ্ত্যের তালে তালে অতি বেশি ঘেঁষাঘেঁষি,
সভ্যতার চরম সুযোগে পরম আনন্দে
মেতে উঠে বিকৃ্তরুচির মানব মানবী,
খায় দায় ফুর্তিতে ভর্তি তার জীবন।
কোথাও এতটুকু চিন্তা নাই হবে একদিন মরন,
বারে-বারে কাটায় জীবন পর নারী নিয়ে সাথী,
অপেক্ষায় দিনগুনে অন্ধকার কবরের মাটি।

আম্মাজানের কোরবানী এবং প্রার্থনা

আম্মাজানের কোরবানী এবং প্রার্থনা
মোহাম্মদ সোহরাব আজিজ
নিউ ইয়র্ক
১১/২৬/২০০৯

ঈদের আনন্দের উল্লাসে কাটে আমার শৈশবকাল
আগের রাতে আজরাইলের চুরি দেখে কোরবানীর পশু হতবিহ্বল ,
প্রিও আব্বাজান সাতভাগে করেন গরু কোরবানী।
ভাগ যায় জান্নাতী দাদা দাদীর নামে,একভাগ পায় নানী।
চাউলের সাদা রুটি বানায় স্বর্গীয় আম্মাজান,
তাজা মাংসের ঝোল দিয়ে খাবে তাই
ভাই বোনেরা খুশিতে আটখান।
আর জায়নামাজে বসে ওজিফা পাঠ করেন,
রবের দরবারে ঐকান্তিক প্রার্থনায় রত,
তসবীহ আর জিকির করেন কতই না দ্রত।
হাজার শোকর আদায় করেনঃ
‘করুনার ভান্ডার তুমি হে মহান
নাড়ীছেড়া ধনের বদলে পশু দিয়ে
আমার বাচাধনের জান বাঁচালে’।
একাগ্রচিত্তে পাঠ করেন পবিত্র কোরান।
প্রভু তুমি দয়া করে
বাড়িয়ে দাও দুনিয়ার সমস্ত মুসলমানের ঈমান-আমান।
এবার ঈদে প্রাণের চেয়ে প্রিয় মা জননীর তরে
বলি দিতে চাই নিজের জান কোরবান।

জুড়াও আজ বিদগ্ধ প্রাণ

জুড়াও আজ বিদগ্ধ প্রাণ
মোহাম্মদ সোহরাব আজিজ
নিউ ইয়র্ক
১১/১৯/২০০৯

কী এক কালিমা লেফে দিলো হন্তারক কাপুরুষ বাংলা মায়ের বুকে
কেড়ে নিলো পিতার তিলে তিলে গড়া সমস্ত অর্জন।
শেষ রাতে লাশ ফেলে ঘাতক
এবং নিহত জাতির জনক।
অথচ কী এক মহান ক্ষমায় তারা নিঃশ্বাস নেয়
স্বাধীন বাংলায়, সোনালী বাংলায়।
হে রাজাধিরাজ তোমার সন্তানেরা আজ
তোমার বুকের চাপা পাথর উপড়ে পেল্লো।
পিতা তুমি এখন শান্তিতে ঘুমাও।
আর স্বর্গ থেকে ঊঁকি মেরে দেখো
‘আমাদের ব্যর্থতা আজ এক প্রবল শক্তিতে পরিনত।
আমাদের শোকেরা আজ শকুনের মাথা কেটে দিলো।‘
তোমার অপমানের জ্বালায় জ্বলে পুড়ে এমন এক আগ্নেয়গিরি গড়েছি আজ,
ধান্দাবাজ কাপুরষ যাদের নেই লাজ
লেজ তুলে পালাবার পথ নাই তার,
তাদের গলেতে পরিয়ে দিয়েছি প্রতিশোধের ফাঁস।
এখন তারা ঘুমের ঘোরে প্রলাপ বকে,
তোমার রক্তমাখা প্রতিচ্ছবি দেখে দেখে
অন্ধকার কবরের দিনগোনে।
ঘাতক তুমি আর কতকাল থাকবে পলাতক?

আমাদের ক্ষমা করো হে জাতির সূর্যসন্তান।
যেখানে তোমায় দেবার কথা ছিলো সাদা পাঞ্জাবি আর জায়নামাজ,
অথচ কতিপয় অবাধ্য পাষন্ড পামর পরায় কাফনের কাপড়।
এখন তারাও পায়ে শিকল পড়ে দিনগুনছে
কখন আজরাইলের ডানার আঘাতে বেরুবে তাদের কলুষিত জান।
ঘাতকের বিচারের রায় শুনো আজ পেতে তোমার কান
আর জুড়াও বিদগ্ধ প্রাণ।
‘জানের বদলে জান,
হন্তারক এখন ভয়ে আচ্ছন্ন,এই তার প্রতিদান।
তোমার দান তোমাকে করেছে কতইনা মহান।‘
আজ নবপ্রভাতের সূর্যস্নান আর নতুন দিনের শপথ তোমারি বাংলায়,
ইতিহাসের কালপুরুষ হাজার বছরের বীরপুরুষ
জাতির জনক বঙ্ঘবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান।

আইলার ভয়াল কোপে

আইলার ভয়াল কোপে
মোহাম্মদ সোহরাব আজিজ
নিউ ইয়র্ক

আইলার ভয়াল কোপে দাকোপের কালাবগী
এবার ঈদে বুঝি দাকোপের বিধ্বস্ত জনগন,
নিজেরাই কোরবান!
গেল বছর দিলো কত গরু ছাগল
কালাবগী খাঁ খাঁ করে আর মানুষের শেষ মনোবল!
কনকনে শীতে ঠকঠকে কাঁপে,
চারিদিকে পানি আর পানি
তিনবেলা খাবার নাই পেটে,অনাহারী।
আইলার কাছে কী অবশেষে পরাজয় মানি?
গেরস্ত বড়ই নিঃস্ব এখন পথের ভিখারী
খোলা আসমানের নিচেই দিনরাত যাপন।
বিধ্বস্ত জনপদে পড়ে আছে লাখো জনতা কাপনের কাপড়
যে লোকালয়ে একদিন ছিল সুখ আর স্বস্তির বান
ঈদের আনন্দ জীবনের ছন্দ ভালবাসার পদ্য,
থই থই জলে ডুবে আছে আজ মানব জমিন
কিছু কিছু মানুষের কপাল কতইনা মন্দ!

স্বাধীনতার সূর্যসন্তান এবং কালের শপথ

স্বাধীনতার সূর্যসন্তান এবং কালের শপথ
মোহাম্মদ সোহরাব আজিজ
নিউ ইয়র্ক
১২/০৩/২০০৯
বিজয়ের মাসে আজ বাজে দুক্ষের নিনাদ
লক্ষ শহীদের তাজা রক্তে নাই কোন খাদ,
অকাতরে বিলায় প্রাণ
জাতির অঘোষিত স্বনামধন্য সূর্যসন্তান,
টেকনাফ হতে তেতুলিয়া
প্রজ্জ্বলিত অকুতোভয় বীরের বীরগাঁথা দিয়া।
গহীন জঙ্গলে পশুপাখী শাপ বিচ্ছুর সাথে একসাথে রাতকাটায়।
সোনার বাংলায় স্বাধীন বাংলায়
সবুজ মাঠে লাল সূর্য উঠাবে তাই।
আজ এই শহীদের পদতলে দিতে চাই আমার পুজার ফুল,
বাংলা মায়ের মুক্তিসেনা শুনো এখন আমার আরতির বোল।
তোমার নিঃস্বার্থ বলিদানে আমি এখন কবিতা লিখি,
তোমার বুকের রক্ত দিয়ে স্বাধীনতার পদাবলি রচি।
তোমার রক্তের ঋৃণ শোধ করার শক্তি নাই আমার
স্বর্গের চিরঞ্জীবি ফুল হয়ে ফুটে উঠো তুমি বাংলার বুকে বারবার।

প্রেয়সীর পরাণ

প্রেয়সীর পরাণ
মোহাম্মদ সোহরাব আজিজ
নিউ ইয়র্ক
১১/২৫/২০০৯

কতদিন
আমি কতদিন দেখিনা তোমার মুখখানি
শুনিনা তোমার ময়ূরকন্ঠী গান
কতদিন বাজাইনা বাঁশি
কতদিন দেখিনা তোমার হাসি রাশি রাশি
কান্দে এখন আমার নিঠুরিয়া পরাণ।
হায়রে নিঠুরিয়া পরাণ
আমার নিঠুরিয়া পরাণ।
কতদিন
কতদিন কান্দে আমার প্রেয়সীর পরাণ।
হায়রে প্রেয়সীর পরাণ।
আমার প্রেয়সীর পরাণ।

কতদিন
কতদিন বাসিনা ভালো
আমি কতদিন বাসিনা ভালো
অমাবশ্যার কালোমেঘে ডুবে গেলো
আমার অন্তরের আলো
হায়রে অন্তরেরই আলো,
আমার প্রেয়সীর পরাণ
হায়রে প্রেয়সীর পরাণ।
আমার প্রেয়সীর পরাণ।

কতদিন
আমি কতদিন দেখিনা পূর্ণিমারি চাঁন
হায়রে পূর্ণিমারি চাঁন
আমার পূর্ণিমারি চাঁন।
কতদিন ভাঙ্গামনে কান্দে আমার প্রেয়সীর পরাণ
হায়রে কান্দে আমার প্রেয়সীর পরাণ
আমার প্রেয়সীর পরাণ।
হায়রে প্রেয়সীর পরাণ।

কতদিন
কতদিন রাখিনা চোখ তার চোখে
ভাসাইনা আমি পিরিতের সাম্পান
হায়রে পিরিতের সাম্পান
হায়রে প্রেয়সীর পরাণ
আমার প্রেয়সীর পরাণ।

কতদিন
আমি কতদিন বিরহের আগুনে পুড়ি
অন্তরেতে হোমানলের গান
তার হৃদয়ের টানে আমার মরা প্রাণে
বাজে এখন দুঃখজাগানিয়া গান
হায়রে প্রেয়সীর পরাণ।
আমার প্রেয়সীর পরাণ।

বাংলার গ্রাম আমার প্রাণ


মোমেনশাহীর ত্রিশালে, উপজেলার মুক্ষপুরে, মাছের খামারে,
বিষ ঢেলে মাছ মেরে ফেলে
দুর্বৃত্তের দলে।
ছাতারপাইয়ার মধ্যবাড়ি আর মজুমদার বাড়ি
কলহের আগুনে পুড়ে যেন এক রাঁঢ়ের বাড়ি।
নাটোরের লালপুর রাধাকান্তপুর
হিংসার দ্বন্ধে কতদিন এক ক্লান্তপুর!
গৌরনদী পৌর শহরের দক্ষিণ পালরদী গ্রাম,
যৌতুকের বলি
'মনি আর মনিরের' প্রেম।
সবাইকে কাঁদিয়ে অভিমানী মনি আত্মহত্যার কোলে
নিষ্ঠুর চরগাধাতলী।


মুক্তিযোদ্ধাদের চতুর্মুখী আক্রমণে পরাভূত পাক বাহিনী,
এদিকে মুক্ত স্বাধীন জনপদে পত্ পত্ করে উড়ছে বাংলাদেশের পতাকা।
অপ্রতিরোধ্য বাঙ্গালীদের অগ্রযাত্রায় মুক্ত
মৌলবীবাজার, বরিশাল, ঝালকাঠি, কুমিল্লা, চাঁদপুর, পিরোজপুর।
রাজাকারের আস্তাকূড়।
জনপদবাসী বিজয় উল্লাসে মেতে উঠে।

একাত্তরে বীরদর্পে লড়ে জাতির অহংকার মুক্তিসেনা
আমাদের বিজয় নিশ্চিতের সূত্রপাত করে,
স্বাধীন বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠায় এক সময়ের স্বপ্ন বাস্তবে রূপ নেয় জাতির মুক্তিযুদ্ধে।
বীর যোদ্ধাদের অদম্য সাহসিকতা আর দেশপ্রেমে পরিচালিত লড়াইয়ে দিশেহারা
তদানীন্তন পাকিস্তানী হানাদার বাহিনী।
সম্মুখ সমরে মুক্তিযোদ্ধাদের কাছে পরাজয়ের ভয়ে ভীত
হানাদারের দোসরেরা।
মুক্তিযোদ্ধাদের সাহস ও বীরত্ব গাঁথা কাহিনী।
প্রিয় মাতৃভূমির স্বাধীনতার জন্য প্রাণপণে লড়ে অকুতোভয়ে।
ইয়াহিয়ার দানবমূর্তি সংবলিত পোস্টার 'এই জানোয়ারদের হত্যা করতে হবে'
চিত্রশিল্পের ইতিহাসে পটুয়া কামরুল হাসান,
স্বাধীন বাংলাদেশের জাতীয় পতাকার চূড়ান্ত নকশা বানান।
'দেশ আজ বিশ্ব বেহায়ার খপ্পরে' কামরুলের কার্টুন চিত্রের থাপ্পড়ে
জেগে উঠে মরা গ্রাম আবার নড়েচড়ে।


শংখ ও ডলু নদীর করাল গ্রাসে বিলীন হতে চলেছে সাতকানিয়া উপজেলার উত্তর কালিয়াইশ, ধর্মপুরের আলমগীর চৌধুরী গ্রাম।
কয়েক শতাধিক পরিবার গৃহহীন
নলুয়া, খাগরিয়া, আমিলাইশ, চরতি, কালিয়াইশ, ধর্মপুর, পুরানগড় ও বাজালিয়া।
চন্দনাইশের চাগাচর, বৈলতলী ও দোহাজারী ইউনিয়নের বহু পরিবার গৃহহীন ।
সাতকানিয়ার কালিয়াইশ ইউনিয়নের পূর্ব কাটগড় গ্রাম নদীগর্ভে অনেকটা বিলীন।
ভাঙ্গনের কবলে ঝুকিপূর্ণ কয়েক শতাধিক পরিবার, হাজার হাজার একর ফসলি জমি, বহু মসজিদ, রাস্তাঘাট, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ব্যবসা প্রতিষ্ঠান।
উত্তর কালিয়াইশ আলমগীর চৌধুরী গ্রাম সাতকানিয়ার মানচিত্র থেকে হারিয়ে যাওয়া শুধু সময়ের ব্যাপার।
ডলু নদীর ভাঙ্গনে সামিয়ার পাড়া, বোয়ালিয়াপাড়া, সতিপাড়া, ছমদরপাড়া, রোজমরপাড়া, মাদার্শা ও রামপুরের তীরবর্তী জনপদগুলো প্রতিবছর নদীগর্ভে বিলীন ।
জলাবদ্ধতায় কালিগঞ্জ, শ্যামনগর, আশাশুনি ও দেবহাটা।
অপরদিকে ইছামতি, কালিন্দী, কাঁকশিয়ালী, খোলপেটুয়া নদীর সংস্কার খালগুলোর দু'পাশের মাটি ভেঙ্গে ভরাট । বর্ষা মওসুমে কৃষকদের ফসল তলিয়ে যায়। কাজ নাই হাজার হাজার মানুষ বেকার ।
তারা না পারে কইতে, না পারে সইতে, না পারছে চাইতে।

নদীর পারে দাঁড়ালেই বাতাসে যেন এখন শুনতে পাওয়া যায় ক্ষীণকায়
তিস্তার দীর্ঘশ্বাস আর গুমরে ওঠা কান্না।
শুষ্ক মৌসুমের শুরুতেই পানিশূন্য তিস্তা পরিণত ধু-ধু বালুচরে।
ক্ষীণধারায় তিস্তার মূল অববাহিকা প্রবাহিত,
শুকনো মৌসুমে বাংলাদেশ অংশ পানি সঙ্কটে পতিত।
তিস্তার পানি এখন হিস্যার বিষয়।
প্রকৃতির কোলে সৃষ্টি এককালের স্রোতস্বিনী পাহাড়ী নদী তিস্তা,
মানুষের হাতে মৃত্যুই যেন এখন তার অমোঘ নিয়তি।
উজানে ভারতের গজলডোবায় প্রবেশমুখে এখন বেঁধে গেছে।
ব্যারাজগুলো এ নদীর উচ্ছল দুর্বার গতিকে রোধ করে দেয়।
বছরের পর বছর ধরে বিভিন্ন ক্যানালের মাধ্যমে নদীর স্রোত ঘুরিয়ে
তার বুক থেকে তুলে নেয়া হচ্ছে এ নদীর জীবন,
তিস্তা তার নাব্যতা হরিয়ে শীর্ণ, কঙ্কালসার।
নদী যখন উচ্ছল স্রোতস্বিনী ছিল,
দু'পারের হাজার হাজার পরিবার যারা এই নদীকে ঘিরে গড়ে তুলেছিল বসতি ও জীবন,
তিস্তার করুণ পরিণতিতে পুরোপুরি বেকার নদীপারের মানুষজন,
নদীর ভরাটে একটু বর্ষায় দু'কূল ছাপিয়ে ফুঁসে ওঠে, প্রতিশোধ নেয় সে মানুষের ওপর।
ঘরবাড়ি, ফসল সব কিছু উজাড় করে ফেলে।
বারবার ভাঙ্গনে নিঃস্ব হয়ে পড়ে লাখো মানুষ।
নদী শুকিয়ে যাওয়ায় মৎসজীবীরা বাপ-দাদার পুরনো পেশা ছেড়ে
এখন দিনমজুর কিংবা গ্রাম ছেড়ে শহরে পালায়, ছিন্নমূল।
খেয়াঘাট বন্ধ হয়, চরাঞ্চলের যোগাযোগ একেবারেই অচল অন্ধ।
তিস্তার ভাঙ্গনে জনেজনে জনপদে বিষন্ন দুপুর।
হারিয়ে গেছে রঙিন পালের নৌকা আর সেই চিরচেনা সুর দূর বহুদুর
'নাইয়ারে নায়ের বাদাম তুইলা'।

~জীবনের ছন্দপতন~ যখন

মানব জমিন
মোহাম্মদ সোহরাব আজিজ
~জীবনের ছন্দপতন~
যখন
~দেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা শ্রীমঙ্গলে~


যাত্রাবাড়ীর মাতুয়াইলে
কৌশলে ঘিরে ফেলে,
সুত্রাপুরের দুধর্ষ সন্ত্রাসী শ্যুটার হাবু বাবু
পুলিশের হাতে অবশেষে কাবু।
অত্যাচার অনাচার বোমাবাজি সন্ত্রাস
কুড়ে কুড়ে খায় সমাজের যাবতীয় শৈলিনতার নির্যাস।

গাইবান্ধায় ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া
সাদুল্লাপুরে ইট-পাটকেল
হবিগঞ্জে আনন্দ মিছিলে টানটান উত্তেজনা
পরাজিত দল জড়ো হয় শায়েস্তানগর,
বিদ্রোহী দলের লাঠি মিছিলে
আতঙ্কে উত্তর শহর খোয়াইমুখ।

মহাখালীর কড়াইল বস্তিতে
সন্ত্রাস্রীরা আড্ডাইয় ব্যস্ত,
নান্দাইলে শফিকুলের দুটি কিডনিই নষ্ট।

মুখোশধারী ধর্ম ব্যবসায়ীর ঘৃণিত ভ্রান্ত মতবাদ
নিপাত যাক নিপাত যাক।

কী এক সুখের বদরগঞ্জ!
১৩ বছরে বিয়ের সিঁড়িতে বসে
আর ২৫ বছরে লাশ অবশেষেঃ
শাহাপুরের পারভীন দামোদরপুরের শেখের হাট তেলীপাড়ায়
নারী লোপসু স্বামী শেখের পুতুল খেলায়।

পবায় মুরালীপুর নামোপাড়ায় গৃহবধূ জবাই
আমবাগানে পড়ে থাকে লাশ।
সাজেমারা আজ কত বড় অসহায়,
আমাদের এই বিশাল বাংলায়।

পচাঁকোড়ালিয়ার হুলাটানা গ্রাম
ধান কাটতে গিয়ে আজ রক্তের আগুনে পুড়ে ছাই
আমতলীতে ভাইয়ের হাতে খুন ভাই।

গফরগাঁওয়ের পাকাটি গ্রাম
পৈত্রিক সম্পত্তির জমির বিবাদে অকাল মৃত্ত্যুর যম।

বাইপাইল বাঁশঝাড়ে
গণধর্ষিতা শ্বাসরুদ্ধ রেহানার গলায় ওড়নার প্যাঁচানো ফাঁস পড়ে।
মধুমতি মডেল টাউনে অজ্ঞাত পরিচয় যুবকের গলিত লাশ মেলে।

রাক্ষুসে কুকুর

রাক্ষুসে কুকুর
মোহাম্মদ সোহরাব আজিজ
নিউ ইয়র্ক

আদ্যিকালের বদ্দ্যি লিখে আমার কবিতার গৌরচন্দ্রিকা
জনান্তিকে থেকে শেষরাতে পাঠ করি নিত্যনতুন পত্রিকা।
যতোসব যশুরে কইয়ের মুখে ফোটে কত খই
শিয়ালপন্ডিতেরা গায় কত রঙের গীত,
কালাপাহাড় দেয়াল তুলে
দশচক্রে ভগবান ভূত।
এখন ভট্টপল্লীতে বাস করে ফাঁসুড়ে রাক্ষুসে কুকুর।
ভূতের বেগার খাটে ভুখাভগবানঃ
জলের দামে কিনে কথার ভট্টাচার্য্য
গল্পের ভুশুড়ি ভাঙ্গে মিটমিটে শয়তান।
আমার কবিতার কালোরাতে ভুখ-মিছিল যেন জলের রেখা
পৌষ পার্বনে পোয়া বারো ভূঁইফোড়ের,
শত্রুর মুখে ছাই দিয়ে চালায় শিয়াল ফাঁকি,
না রাম না গঙ্গা
আরক্তলোচন যমের দোসর
দিনরাত ঘুরে ফিরে রাঁঢ়ের বাড়ি।
খোশামোদের গলেতে ঝুলে তোষামোদের মালাচন্দন,
প্রতিভার ভুষ্টিনাশে ব্যস্ত যত শঠে শাঠ্যং।
ধরাকাট ভীষ্মের প্রতিজ্ঞায়
আমার কবিতার এখন অতি বেশি ঘর্মাক্ত কলেবর।

বীরসেনার বীরগাঁথা

আমার কবিতার কালোরাত

বীরসেনার বীরগাঁথা
মোহাম্মদ সোহরাব আজিজ
নিউ ইয়র্ক
ডিসেম্বর,২০০৯।

জীবন যুদ্ধে আমরা সবাই মুক্তিযোদ্ধা।
একাত্তরের অকুতোভয় বীরসেনা
তোমাদের নিস্বার্থ উৎসর্গের বীরগাঁথা
বাংলার প্রতিটি মানুষের হৃদয়ের গভীরে গাঁথা।
বিজয়ের মাসে আজ রত
পৃথিবীর শ্রেষ্ঠ সন্তানের বিদেহী আত্মার মাগফেরাত কামনায়,
এখন তোমাদের বীরত্ত্বের স্মৃতি চারণে
আমাদের দুনয়ন ভাসে অজস্র অশ্রুর বন্যায়।

একাত্তরের কালরাতে

স্বাধীনতার স্বাদ পেতে বুকে বুলেটের মালা পেতে নেয় বীরযুবায়,
অথচ আজ প্রতিটি ঘরে ঘরে এ কেমন পরাধীনতার যাতা?
স্বদেশের মুক্তির স্বাদ নিতে গিয়ে ধর্ষিতা আমার কত অজানা বোন আর মাতা।
বীরাঙ্গনা নারী তার ইজ্জত আর সভ্রমের বিনিময়ে কিনে সারা বাংলা মায়ের সম্ভ্রম।
অথচ এখানে এখন অবলা নারীর আর্তচিৎকারে কেঁপে উঠে মুক্তিসেনার গলিত কাপন!
লাখো শহীদের বুকের তাজা রক্তের দাগের মানচিত্রে
আর কত রক্তক্ষরন ঘটাবে হন্তারক?
স্বাধীন দেশে আর কত কাল পরাধীনতার নাগপাশে বন্দী থাকবে
আমার বাংলার রক্তাক্ত পতাকা?
জাতির বুকে চাপা পাহাড়ের পাথর সরাতে
সকল আগাছার উৎখাত ঘটাতে
আবার কখন গর্জে উঠবে বাংলার অগনিত বীরযুবা?

যশোরের ধুসরতায়

আমার কবিতার কালোরাত

যশোরের ধুসরতায়
মোহাম্মদ সোহরাব আজিজ
নিউ ইয়র্ক
ডিসেম্বর,২০০৯।

তীব্র শীতে ঠক ঠকে কাঁপে অশীতিপর বৃদ্ধ-বৃদ্ধায়
পৌষেই মাঘের বাঘকাঁপানো থান্ডায়
ঘন কুয়াশায় হিমেল হাওয়ায়
গৃহবন্দী কৃষক মজুর আবাল বৃদ্ধ বনিতায়।
দৌলতপুরের দরিদ্র দুঃস্থ পল্লীতে
উত্তরপাড়ায়, মরিচার বৈরাগীর চর
শীতবস্রহীন মানুষেরা মরে খেয়ে কনকনে শীতের আঁচড়।
রক্ত জমানো হাড় কাঁপানো শীতের আঁচড়!
যশোর এখন আবৃত হিমেলের ধুসরতায়,
শহরতলীর খয়ের তলায়
প্রান্তিক জনগনে দূর্ভোগে দিনকাটায়।
ফুটপাথ রেল স্টেশন কিম্বা কুঁড়েঘরে
তিমির তীব্রতায় মরণ কামড় মারে।
শহরের গরীব মার্কেটে উপচে পড়ে ভীড়
যদি মিলে ফিরে গরম কাপড়।
উনুনে আগুন পোহায়
বাড়ি বাড়ি ঘরে ঘরে জনে জনে।
‘যত শীত তত মিষ্টি ঐতিহ্যের যশোরে’
খেজুর গাছে রসের কলস আবার ঝোলে
অতি মিষ্টি গুড় পাটালীর ধুম পড়ে কুয়াশার সকালে।
এক আশায় বুক বাধে বিপন্ন মানুষেরা জীবনের সংগ্রামে।

Thursday, December 3, 2009

আল্লাহের ঘরের মেহমান

আল্লাহের ঘরের মেহমান

মোহাম্মদ সোহরাব আজিজ

২৪শে নভেম্বর,২০০৯

নিউ ইয়র্ক।

হাজীরা ইহরাম বেঁধে,

লাব্বায়েক আল্লাহুমা লাব্বায়েক ধ্বনিতে প্রকম্পিত করে পবিত্র মক্কা নগরী,

মীনায় পাঁচওয়াক্ত নামাজ আদায় করে, উচ্চস্বরে তালবিয়া পড়তে থাকে।

করুনার পাহাড়ের পাদদেশ আরাফায় হজের খোতবা শুনে মনপ্রাণে,

মুজাদালেফায় খোলা আকাশের নিচে রাতযাপন শেষে

মিনায় শয়তানকে কঙ্কর নিক্ষেপ করে আবাল-বৃ্দ্ধ-বণিতায়,

রবের দরবারে মাথানত তাই ।

কোরবানী আদায় শেষে মাথামুন্ডন করে অবশেষে।

জান্নাতের টুকরা হাজরে আসওয়াদ কালো পাথর দুনিয়াতে বেহেস্তের অংশ

আল্লাহ পাকের দক্ষিণ হস্ত,

হাজীরা আজ সেই কুদরতি হাতের সাথে করমর্দন করে,

শাহেনশাহের হাত ধরে যেমন করে সন্মানিত হয় অতি ছোটলোকে।

কালোপাথরের ঠোঁট আর দুইটি জিহ্বা ,কিয়ামতে সাক্ষী হবে তোমার মুক্তির তরে।

আমি জানি তুমি পাথরমাত্র,ক্ষতি ও উপকার কিছুই কর না,

তোমাকে চুম্বন করি রবের প্রতি সন্মান প্রদর্শনে,

রাসূলের আদেশ পালনের পূর্ণ বাস্তবায়নে।

আতিউল্লাহা আর আতিউররাসূলা নীতির অনুসরনে।

কাবা ঘর তওয়াফ করে ঈমানদার বান্দায়

আর মদিনা মনওয়ারায় প্রিয় নবীজির রওজায়

শতকোটি সালাম জানায়।

কোরবানী এখন

কোরবানী এখন

মোহাম্মদ সোহরাব আজিজ

২৪শে নভেম্বর,২০০৯

নিউ ইয়র্ক

প্রিয়জনের সান্নিধ্যে ঈদ উদযাপনে ঘরমুখো মানুষের ভীড়,

বড়ই আনন্দঘন পরিবেশ

ব্যস্ততা প্রবল কোরবানীর পশুর হাটে ,

ব্যাপক জনসমাগম ঘটে গবাদিপশুর হাটে,

মার্কেট শপিং সেন্টার,রেলওয়ে স্টেশন বাস, লঞ্চ ঘাটে,

ঘরফেরা মানুষের উপচেপড়া ভীড়ে

পশু হাট গাবতলীতে শুধু গরু নয় এসেছে মরুর প্রাণী উট

মহিষ, খাসী ভেড়া প্রচুর

বিদেশী বা শঙ্কর জাত ,দেশী জাতের গরু

কাতারে কাতার দেশী জাতের ষাঁড়

শখের পশুটিকে সাজাতেই যতসব আয়োজন

হযরতনগরের দেওয়ানবাড়ির দাদখান

সিন্ধি জাতের ষাঁড়ের দাম হাঁকেন লাখখান

ঈদের দিন বলিয়া মদিনার ঘরে ঘরে আনন্দ,’

সারা দুনিয়ার মুসলমানের ঘরে ঘরে আনন্দের ছন্দ

মহান আল্লাহ রাব্বুল আলআমিনের আদেশ পালনের আনন্দ

বিরাট গরুছাগলের হাটে ধর্মপ্রাণ মানুষের ঢল

লাখো টাকার গরু নিয়ে কত হইহুল্লা আর শরগোল

কে কার চেয়ে বেশি দাম হাঁকাতে পারে তারি কম্পিটিশন

আর একদিকে নিরীহ প্রাণীরা রবের সন্তুষ্টি কামনায় নিরবে চোখের জল ফেলে

নিজের জীবন উৎসর্গ করে

পশু হয়ে জন্মেছি, মানুষতো জবাই করবে একদিনখাবে এই পবিত্র ইদে,

কোরবানী হই এটাই পরম পাওয়া

গাবতলী বাজারে হাজার হাজার পশুর শেষ কারবার,

বেঁচে আছি আর কদিন,এইটুকু শোকরগোজার

জানি তবে প্রভুর দরবারে মাংসপিন্ড যায়না,

শুধু রক্তের পিঙ্কি পড়ে আরশের আয়নায়

উৎসর্গের নজির আর বিশ্বাসের জোর

স্বাধীনতার সূর্যসন্তান এবং কালের শপথ

স্বাধীনতার সূর্যসন্তান এবং কালের শপথ
মোহাম্মদ সোহরাব আজিজ
নিউ ইয়র্ক
১২/০৩/২০০৯
বিজয়ের মাসে আজ বাজে দুক্ষের নিনাদ
লক্ষ শহীদের তাজা রক্তে নাই কোন খাদ,
অকাতরে বিলায় প্রাণ
জাতির অঘোষিত স্বনামধন্য সূর্যসন্তান,
টেকনাফ হতে তেতুলিয়া
প্রজ্জ্বলিত অকুতোভয় বীরের বীরগাঁথা দিয়া।
গহীন জঙ্গলে পশুপাখী শাপ বিচ্ছুর সাথে একসাথে রাতকাটায়।
সোনার বাংলায় স্বাধীন বাংলায়
সবুজ মাঠে লাল সূর্য উঠাবে তাই।
আজ এই শহীদের পদতলে দিতে চাই আমার পুজার ফুল,
বাংলা মায়ের মুক্তিসেনা শুনো এখন আমার আরতির বোল।
তোমার নিঃস্বার্থ বলিদানে আমি এখন কবিতা লিখি,
তোমার বুকের রক্ত দিয়ে স্বাধীনতার পদাবলি রচি।
তোমার রক্তের ঋৃণ শোধ করার শক্তি নাই আমার
স্বর্গের চিরঞ্জীবি ফুল হয়ে ফুটে উঠো তুমি বাংলার বুকে বারবার।